ক্রীড়া প্রতিবেদক |
২০২৩ বিশ্বকাপ নিকটে, এখনই বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার সেরা সময়: হাথুরুসিংহে
বিশ্বকাপের বছরে কোচ পরিবর্তনের রীতি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খুব একটা দেখা যায় না। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সেই ঝুঁকিটা নিয়েছে। কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে ‘সরিয়ে’ পুরোনো কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহকে ফিরিয়েছে বিসিবি।
২০১৭ সালে বাংলাদেশের চাকরি ছাড়ার পর ছয় বছর পর আবার ফিরেছেন ৫৪ বছর বয়সী কোচ। এর আগেও একাধিকবার হাথুরুসিংহকে চেয়েছিল বিসিবি। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় ফেরেননি। গত বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালিন আবার প্রস্তাব দেওয়া হলে লুফে নেন হাথুরুসিংহে।
কয়েক মাসের মধ্যেই নিউ সাউথ ওয়েলসের চাকরি ছেড়ে আবার বাংলাদেশ ক্রিকেটে ফিরলেন তিনি। দায়িত্ব গ্রহণ করে বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন হাথুরুসিংহে। নিজের প্রথম প্রশ্নেই ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করলেন, ২০২৩ বিশ্বকাপকে লক্ষ্য করে ফিরেছেন তিনি।
‘আমি চলে যাওয়ার পরও বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনুসরণ করেছি। সময়ে সময়ে আমার সঙ্গে অনেক খেলোয়াড়, কর্মকর্তার যোগাযোগ হয়েছে। সেটা বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে। বাংলাদেশ ক্রিকেট সব সময়ই আমার হৃদয়ে আছে। কারণ, সেটা ছিল আমার প্রথম আন্তর্জাতিক অ্যাসাইনমেন্ট। ব্যাক অব দ্য মাইন্ডে ছিল আবার বাংলাদেশে ফিরবো। কিন্তু ভাবিনি এতোটা দ্রুত হবে।’
‘বিশ্বকাপ চলাকালিন প্রেসিডেন্ট (বিসিবি) এবং কিছু অফিসিয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সেখানেই আলোচনা হয়েছিল কিছু বিষয় নিয়ে। ভেবেছি এখনই সেরা সময় এখানে ফেরার। ২০২৩ সালে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ আছে। নিউ সাউথ ওয়েলসের মৌসুম শেষে ফিরলে দেরি হয়ে যেত। তাই বিগ ব্যাশ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই আমি সিদ্ধান্ত নিই এখনই ভালো সময় বাংলাদেশে ফেরার।’
আইসিসি ইভেন্টে হাথুরুসিংহের হাত ধরেই বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সাফল্য পেয়েছে। ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশ খেলেছিল সেমিফাইনাল। ২০১৫ সালে খেলেছিল কোয়ার্টার ফাইনাল। নিশ্চিতভাবেই হাথুরুসিংহের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। ভারতে ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে। উপমহাদেশে বিশ্বকাপ হওয়ায় বাংলাদেশের থেকে অনেক প্রত্যাশা। সেই প্রত্যাশার চাপ রয়েছে হাথুরুসিংহের ওপরও।
‘কোচরা সবসময়ই চাপে থাকেন। দল ভালো করলে কোচরা টিকে যান। দল ভালো না করলেও কোচের দিকে আঙুল তোলা হয়। আমাদের সবারই প্রত্যাশা থাকে। দেশের সবারই প্রত্যাশা আছে। কারণ, এটা (ওয়ানডে বিশ্বকাপ) ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর এমন একটা ফরম্যাটে এই প্রত্যাশাটা যেখানে আমরা খুব ভালো খেলি। তাই প্রত্যাশাটা অনেক বড়। এটা সম্পূর্ণভাবে আমরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। আমরা কিভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী। বড় খেলোয়াড় এবং মূল খেলোয়াড় যারা আছে তারা প্রত্যেকে ফিট এবং সুস্থ থাকেন। আমরা যদি সেরকম কিছু করতে চাই অবশ্যই আমাদের সেভাবেই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে হবে।’
২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে সেমিফাইনালে গিয়ে আটকে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে লড়াইয়ে পারেনি। আইসিসি ইভেন্টে নিজেদের সর্বোচ্চ সাফল্য ছাপিয়ে যেতে পারবে সামনে?
নিজের কোর্টে এমন প্রশ্ন পাওয়ার পর হাথুরুসিংহে বেশ আত্মবিশ্বাস নিয়েই বলেছেন, ‘এটা খুব বিরাট প্রশ্ন (হাসি) । এটা এমন একটা জিনিস যেটা আমরা চাই। তবে এটা সময় নির্ধারণ করে দেবে। এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না। এই মুহূর্তে আমরা শীর্ষ চারের মধ্যেও নেই। এখানে এসেই বলা যে, হ্যাঁ আমি এটা করে দেখাব খুব বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। আমাদেরকে এখনও কিছু জায়গায় উন্নতি করতে হবে। আমাদেরকে আরও ফিট হতে হবে। নিজেদের স্কিলে আরও উন্নতি আনতে হবে। সেরা কম্বিনেশন বাছাই করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে খেলোয়াড়রা যেন টপ ফর্মে থাকে বিশ্বকাপ পর্যন্ত। দেখা যাক সামনে কি হয়।’