আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
তুরস্কে ভবন নির্মাণে নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেপ্তার হওয়া ঠিকাদার।
তুরস্কে ১৩০ জন ঠিকাদারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলেছে, ভবন নির্মাণে নিরাপত্তার মান লঙ্ঘন করায় ভূমিকম্পে অপ্রত্যাশিত এত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সিরিয়া এবং তুরস্কে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ১২ হাজার ভবন ধসে পড়ার ছয় দিন পর দেশটির সরকার এই পদক্ষেপ নিল। ভূমিকম্পের কারণে ইতিমধ্যে ২৮ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় রবিবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অন্তত ১২ জনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে তুরস্কের বিচারমন্ত্রী বেকির বোজদাগ সতর্ক করে বলেছিলেন, ‘যারা অবহেলা করেছে, ভূমিকম্পের পর ধ্বংসের জন্য দোষী এবং দায়ী তারা ন্যায়বিচারের মুখোমুখি হবে।’ তুরস্কে প্রায় দুই দশক ধরে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় ভবন নির্মাণের জন্য সুরক্ষা নির্দেশিকা রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেগুলো খুব কমই প্রয়োগ করা হয়েছে।
বেসরকারি বার্তা সংস্থা ডিএইচএ এবং অন্যান্য গণমাধ্যম জানিয়েছে, রবিবার ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষ আদিয়ামানে বেশ কয়েকটি ভবন ধসের জন্য দায়ী দুই ঠিকাদারকে আটক করেছে। তারা জর্জিয়ার পথে রওনা দিয়েছিলেন। অন্যদিকে ধসে পড়া একটি ভবনে অতিরিক্ত ঘর তৈরির জন্য কলাম কেটে ফেলার সন্দেহে গাজিয়ান্তেপ প্রদেশে আরো দুজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আনাদোলু।
এর আগে শুক্রবার ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে এক ঠিকাদারকে আটক করে কর্তৃপক্ষ। তিনি হাতায় প্রদেশের ঐতিহাসিক শহর আন্তাকায় একটি বিলাসবহুল ১২তলা ভবনের ঠিকাদার ছিলেন। ভবনটি ধসে পড়ায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে।
তুরস্কের চেম্বার অব আর্কিটেক্টের সভাপতি ইয়ুপ মুহকু গত সপ্তাহে এএফপিকে বলেছিলেন, বিপর্যয়ের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি অনেকগুলো ভবন অনেক দ্রুত নির্মাণ করা হয়েছে এবং সেগুলো ‘দুর্বল’ ও ‘মজবুত নয়’। এই বিপর্যয়ে কমপক্ষে ১২ হাজার ভবন ধসে পড়েছে এবং তুর্কি সরকার এখন ঠিকাদারদের অবহেলার ফলে কোন কোন ভবন ধসে পড়েছে তা মূল্যায়ন করার জন্য দৌড়াচ্ছে।
এদিকে তুরস্কের বিচার মন্ত্রণালয় পরিকল্পিতভাবে ভূমিকম্প অপরাধ তদন্তে ব্যুরো প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে। যার লক্ষ্য হবে নির্মাণকাজের জন্য দায়ী ঠিকাদার এবং অন্যদের চিহ্নিত করা, প্রমাণ সংগ্রহ করা, স্থপতি, ভূতত্ত্ববিদ এবং প্রকৌশলীসহ বিশেষজ্ঞদের নির্দেশ দেওয়া এবং ভবনের অনুমোদন ও পেশার অনুমতি পরীক্ষা করা।
সূত্র : দ্য ন্যাশনাল নিউজ