রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

বিজয়ের কাগজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩
  • ৫০ বার পঠিত

অনলাইন ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তার দক্ষিণ আফ্রিকা সফর ছিল অত্যন্ত ফলপ্রসূ। কারণ, এটি বাংলাদেশের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যে একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।

২২-২৪ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ এবং ব্রিকস প্লাস সংলাপে যোগদান উপলক্ষে মঙ্গলবার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫তম ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ এবং ব্রিকস প্লাস সংলাপে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চিত্র বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে পেরেছি। একই সঙ্গে আমরা রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে গৃহীত বিভিন্ন প্রস্তুতি ও কার্যক্রম সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করেছি। দক্ষিণের দেশসমূহের ওপর আরোপিত কৃত্রিম সিদ্ধান্তের কারণে আমরা আর ক্ষতিগ্রস্ত হতে রাজি নই। সর্বজনীন নিয়মের নামে আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া অসম নীতিকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য আমি দক্ষিণের দেশসমূহকে আহ্বান জানিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, এ সম্মেলনের মাধ্যমে পারস্পরিক বৃদ্ধি তরান্বিত করা, টেকশই উন্নয়ন ও অন্তর্ভূক্তিমূলক বহুপাক্ষিকতা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে এবং ব্রিকস জোট এক্ষেত্রে একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে তার ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করবে বলে আমি আশা করি।

শেখ হাসিনা বলেন, ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য আমি ২২ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে যাই। ২৩ আগস্ট ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিট’-এ দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের কথা তুলে ধরি। তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানাই। বাংলাদেশের ট্রিলিয়ন-ডলার অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত হওয়ার অভিযাত্রায় তাদের সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানাই।

সরকার প্রধান বলেন, আফ্রিকা মহাদেশের ৯টি দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতগণের অংশগ্রহণে ‘আঞ্চলিক দূত সম্মেলন’-এ অংশগ্রহণ করে রাষ্ট্রদূতদের সরকার কর্তৃক গৃহীত ‘লুক আফ্রিকা পলিসি’র আওতায় আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক কূটনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ দ্বিপক্ষীয় সম্ভাবনাময় খাতসমূহ চিহ্নিতকরণ ও দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই। এছাড়া রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য রাষ্ট্রদূতদের স্বাগতিক দেশগুলোর সরকার যেন জোরালো অবস্থান গ্রহণ করে সেজন্য কাজ করার নির্দেশনা প্রদান করি।

তিনি বলেন, চীনের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ‘সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারিত্বের’ বিষয়ে পারস্পরিক অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করি। চীনের রাষ্ট্রপতি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশকে সবসময় সমর্থন দিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের জ্বালানি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে সহায়তা করতে আগ্রহের কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ এবং ব্রিকস প্লাস সংলাপে আমি গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠন এবং নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরি। একই সঙ্গে রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করি।

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, বৈশ্বিক দক্ষিণে অবস্থানকারী দেশসমূহের ওপর আরোপিত কৃত্তিম সিদ্ধান্ত এবং বিভাজনের নীতিকে ‘না’ বলার এখনই উপযুক্ত সময়। সর্বজনীন নিয়ম ও মূল্যবোধকে অস্ত্রে পরিণত করার প্রচেষ্টাকে আমাদের অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আমাদের নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার চক্র বন্ধ করতে হবে। সব হুমকি, উসকানি ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। বিপজ্জনক অস্ত্র প্রতিযোগিতায় সম্পদ অপচয় না করে বিশ্বব্যাপী জনসাধারণের জন্য পণ্য ও পরিষেবা প্রদানে অর্থ সংস্থান করতে হবে। বিশ্বজুড়ে শান্তি, ন্যায়বিচার ও স্থিতিশীলতার জন্য সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।

সরকার প্রধান আরো বলেন, ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ এবং ব্রিকস প্লাস সংলাপে বিভিন্ন দেশের প্রধান ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। এ সফর আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2023 Dailybijoyerkagoz
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com