শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৪৪ অপরাহ্ন

জাতীয় পাট দিবসে পুরস্কার পাচ্ছেন ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান

বিজয়ের কাগজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৫ মার্চ, ২০২৩
  • ৪৫ বার পঠিত

অনলাইন ডেস্ক:
পাট ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে অবদানের জন্য এবার ১১ ব্যবসায়ী, বিজ্ঞানী, চাষি ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে। আজ রবিবার (৫ মার্চ) সকাল ১১টায় সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘পাটক্ষেত উন্নয়নে গবেষণা কার্যক্রম, পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জন, প্রচলিত ও বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে এ বছর পাট দিবসে মোট ১১টি ক্যাটাগরিতে ১১ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হবে। এ ছাড়া পাটসংশ্লিষ্ট অংশীজনদের শুভেচ্ছা স্মারক দেওয়া হবে।’

মন্ত্রী বলেন, সোনালি আঁশ পাটের সঙ্গে বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। শুধু তাই নয়, বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে পাটের ভূমিকা একটি স্বীকৃত ইতিহাস। পরিবেশবান্ধব তন্তু হিসেবে পাটের গুরুত্ব বিবেচনায় পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে পাট ও পাটপণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক তন্তু হিসেবে সোনালি আঁশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা তুলে ধরার লক্ষ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় অন্যান্য বছরের মতো এবারও ৬ মার্চ ‘জাতীয় পাট দিবস ২০২৩’ উদযাপন করতে যাচ্ছে। এবারের জাতীয় পাট দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘পাটশিল্পের অবদান- স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ’।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাটজাত পণ্যকে বর্ষপণ্য ২০২৩ এবং সোনালি আঁশ পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এরই মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে, পাটপণ্যকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় নানামুখী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু করেছে। সে লক্ষ্যে পাট খাতের অংশীজনসহ বছরব্যাপী জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রদর্শনী, সেমিনার, সভা ও প্রচারণামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরের পাশাপাশি কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতে ও পাটসমৃদ্ধ ফরিদপুর জেলায় পাট ‍ও পাটজাতপণ্য প্রদর্শনী ও মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। এ ছাড়া ১২-১৬ মার্চ শিল্পকলা একাডেমিতে পাঁচ দিনব্যাপী বহুমুখী পাটপণ্য প্রদর্শনী ও মেলা আয়োজন করা হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের (জেডিপিসি) মাধ্যমে পাটপণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকার বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উদ্ভাবন ও ব্যবহার সম্প্রসারণে গুরুত্বারোপ করেছে। জেডিপিসির নিবন্ধিত উদ্যোক্তারা বিভিন্ন রকম দৃষ্টিনন্দন পাটপণ্য উৎপাদন করছেন- যার অধিকাংশই বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। বহুমুখী পাটজাত পণ্যকে জনপ্রিয় করতে প্রচার-প্রচারণাসহ বিদেশে বিভিন্ন মেলার আয়োজন করার কাজ চলমান রয়েছে। এসব মেলা পাটজাত পণ্য উৎপাদনকারী, বিপণনকারী, ব্যবহারকারী এবং বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যে অধিক যোগাযোগ স্থাপনে সহায়ক হবে।

তিনি বলেন, বিজেএমসির মিলগুলো সরকারি মালিকানায় রেখে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ছয়টি জুট মিল ইজারা প্রদান করা হয়েছে। এরই মধ্যে তিনটি মিলে বাণিজ্যিক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। আরো পাঁচটি মিলের ইজারা প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে।

তিনি জানান, উচ্চফলনশীল (উফশী) জাতের পাটবীজ ব্যবহারের মাধ্যমে অল্প জমিতে অধিক পাট উৎপাদন, পাটবীজের আমদানিনির্ভরতা হ্রাস করে পাটবীজ উৎপাদন পাটচাষিদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা, পাট চাষের আধুনিক কলাকৌশল সম্পর্কে পাটচাষিদের প্রশিক্ষণ প্রদানের নিমিত্তে পাট অধিদপ্তরের অধীন ‘উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পটি দেশের ৪৬টি জেলার ২৩০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। মানসম্মত পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে পাঁচ বছরের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় যৌথ উদ্যোগে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে। আশা করি, বাংলাদেশ উন্নত পাটবীজ উৎপাদনে স্বনির্ভর হবে। প্রয়োজনীয় পাটবীজ সংগ্রহে আমদানিনির্ভরতা আর থাকবে না।

তিনি জানান, দেশের শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে পাট খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। জাতীয় অর্থনীতিতে এ খাতের অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রপ্তানি আয়ে পাট খাত উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। দেশের প্রায় চার কোটি লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ খাতের ওপর নির্ভরশীল। পাটশিল্পের পুনরুজ্জীবন ও আধুনিকায়নের ধারা বেগবান করার লক্ষ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ‘পাট আইন ২০১৭’, ‘জাতীয় পাটনীতি, ২০১৮’, ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন ২০১০’, ‘চারকোল নীতিমালা ২০২২’ প্রণয়ন করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জাননো হয়, আগামী ৬ মার্চ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন, ঢাকায় পাট দিবসের মূল অনুষ্ঠান এবং মতিঝিলস্থ করিম চেম্বারে বহুমুখী পাটপণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হবে। শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণার সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মির্জা আজম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া দেশব্যাপী বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনাসভা ও বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিকগুলোয় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2023 Dailybijoyerkagoz
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com