অনলাইন ডেস্ক:
মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সংগৃহীত ছবি
রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের জন্য ৭০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। আজ মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টরের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন—রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের জন্য ৭০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে ৩১৫ মিলিয়ন ডলার রোহিঙ্গাদের জন্য, আর বাকি ৩৮৫ মিলিয়ন ডলার রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের জন্য সফট লোন।
তিনি জানান, বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ৫৬ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ১৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আছে এবং বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সাথে কার্যক্রম আরো বৃদ্ধির কথা বলেছেন।
বিএনপি প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সমগ্র বিশ্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে, কাজের আগ্রহ প্রকাশ করেছে—এসব দেখে বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
’
দুই শীর্ষ সম্মেলনে কান্ট্রি স্টেটমেন্ট দেওয়ার পাশাপাশি সাইডলাইনে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট, জাতিসংঘের মহাসচিব, কমনওয়েলথ মহাসচিবের সাথে বৈঠকসহ দুই দিনে ১৭টি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘প্রথম দিনেই ১২টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বহু দেশের প্রতিনিধিদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে। সবাই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে।
তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে এবং একসাথে কাজের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সামিটের সাইডলাইনে যেসব দেশের সাথে বৈঠক হয়েছে, আমরা কয়েকটি বিষয় প্রাধান্য দিয়েছি। এর মধ্যে ইকোনমিক ডিপ্লোম্যাসি, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যু অন্যতম।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গাজা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘ মহাসচিবকে অনুরোধ করেছি এবং তিনি যে রাফাহ সীমান্তে গিয়ে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ নিরসনের আহ্বান জানিয়েছিলেন সে জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবাসনের বিষয়েও আলাপ হয়েছে।
এ সমস্যার সমাধানে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।’
মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, যিনি একই সাথে উপপ্রধানমন্ত্রী, তাঁর সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটি শুরু করতে বলেছি এবং তিনি ব্যক্তিগতভাবে এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন, উল্লেখ করেন ড. হাছান।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আসার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য অনেকটাই কমেছে। আমরা আবার দেশটির সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করেছি। মিয়ানমার থেকে নানাভাবে মাদক আসে এবং সেখানে বিভিন্ন গ্রুপ নিজেরা বিবদমান থাকলেও একত্রে মাদক ব্যবসায় জড়িত সেটি তারা স্বীকার করেছেন এবং এর প্রতিকারের উদ্যোগ নিতে সম্মত হয়েছেন।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতকেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।’
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলো নিয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘উগান্ডায় কৃষির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। দেশটিতে তুলা চাষ করা যায়। পাম অয়েলও চাষ করা যায়। আমরা পরিকল্পনা করছি, শিগগিরই একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল সেখানে পাঠাব। বেলারুশ, ব্রাজিল ও ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা প্রত্যেকে আগ্রহ দেখিয়েছে।’
সিঙ্গাপুর, বাহরাইন, সৌদি আরব, কাতারসহ যেসব দেশে আমরা জনশক্তি রপ্তানি করি সেখানে প্রতিবন্ধকতা বা সমস্যা সমাধানের জন্যও আলাপ হয়েছে এবং পাশাপাশি ফিলিস্তিন, নেপাল, বেনিন, বতসোয়ানার সাথেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কথা জানান মন্ত্রী।
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার দপ্তরে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক।